হযরত রকীব শাহ্ (র:) তাঁর ভক্তদের নিয়ে বছরে ৪টি উরশ পালন করতেন। উরশের তারিখ ছিল নি¤œরূপ :
১৪ জৈষ্ঠ
২৭ আশ্বিন
৮ মাঘ ও
১৭ ফাল্গুন।

১৩৫২ বাংলার ১৭ ফাল্গুন হযরত রকীব শাহ্ (র:) তাঁর মুর্শিদ হযরত মৌলানা সৈয়দ আব্দুল লতিফ জালালাবাদী চিশতী নিজামী হোসাইনীর কাছ থেকে সিজরা ও সনদ লাভ করেন। এখানে উল্লেখ্য ১৭ ফাল্গুন হযরত রকীব শাহ্ (র:) এর জন্ম দিন। তাই তাঁর মুর্শিদ এদিনকে সিজরা সনদ প্রদানের দিন হিসাবে ধার্য্য করেন এবং ভক্তদের উপস্থিতিতে সিজরা সনদ দান করেন। পরবর্তীতে ১৩৫৩ বাংলার ২২ পৌষে মুর্শিদ লতিফ শাহ্ তাঁর মুরিদ রকীব শাহকে গদি বা আসন প্রদান করেন।
এখানে আরো উল্লেখ্য ৮ মাঘ হলো পীরজাদা ড. কাজী কামাল আহমদ এর জন্মদিন। রকীব শাহের মুর্শিদ লতিফ শাহ্ পীরজাদা কামালকে অত্যন্ত ভালবাসতেন এবং ¯েœহ করতেন। তাই ৮ মাঘে একটি উরশ পালন করার জন্য তাঁর মুর্শিদ রকীব শাহ্কে নির্দেশ দেন। সেই মোতাবেক রকীব শাহ্ তাঁর ছেলে শাহ্ কামালের জন্মদিনে একটি উরশ পালন করতেন।
সুনামগঞ্জের বোরো চাষীদের অনুরোধে রকীব শাহ্ ১৪ জৈষ্ঠ একটি উরশ পালন করতেন। কারণ এই সময়ে রোরো চাষী ভক্তরা কর্মক্লান্ত জীবনে একটু ফুরসত পেতেন এবং মুর্শিদ দর্শনে মুর্শিদ বাড়ী আসতে পারতেন। অনেকে মুর্শিদ বাড়ীতে এসে নবান্ন অনুষ্ঠান ও তাবারুক বিতরন করতেন।
রকীব শাহ্ হযরত লতিফ শাহের কাছে বায়েত গ্রহণ করার পর তাঁর মুর্শিদ প্রথম মুরিদের বাড়ীতে আসেন ২৭ আশ্বিন ১৩৪৯ বাংলায়। সেইদিন রকীব শাহ্ একদিন উরশ পালন করতেন। এইভাবে রকীব শাহ্ বছরে উপরে উল্লেখিত তারিখে ৪ দিন উরশ পালন করতেন।
১৯৬৯ ইংরেজীর ২৬শে মার্চ জেনারেল ইয়াহিয়ার মার্শাল ল’ জারীর পর পরই তৎকালীন পাকিস্থানের সর্বত্র উরশ, ওয়াজ, পুজা ইত্যাদি সহ সকল প্রকার সভা সমাবেশ সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু হযরত রকীব শাহ্ (র:) ৩য় বর্ষিক উরশ শরীফ বন্ধ হয় নি। বরং সামরিক অনুমতি ও

নির্দেশে জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় পুলিশবাহিনীর প্রত্যক্ষ প্রহরায় অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে উরশ মাহফিলের সকল অনুষ্ঠান যথাযথ মর্যাদায় অনেক ভক্তের উপস্থিতিতে ভাবগম্ভীর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। নি¤েœ মার্শাল ল’ কর্তৃপক্ষের অনুমতি পত্র প্রদর্শিত হলো।

অনুমতিপত্র

১৯৬৯ ইংরেজী ১১মে রকীব শাহের ৩য় বার্ষিক উরশ শরীফে ভক্তবৃন্দের উপস্থিতিতে পীরজাদা ড. কাজী কামাল আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় রকীব শাহের বার্ষিক উরশ শরীফের তারিখ পুননির্ধারিত হয় এবং প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের ১৬, ১৭ ও ১৮ তারিখ উরশ উদযাপনের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সেই মোতবেক হযরত রকীব শাহের জন্মদিন ১৭ ফাল্গুনকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর ১৬, ১৭ ও ১৮ ফাল্গুন উরশ শরীফ অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়ে আসছে। এভাবে অদ্যাবধি হযরত রকীব শাহ্ (র:) এর ৫৪তম পর্যন্ত উরশ শরীফ হাজারো ভক্তের উপস্থিতিতে ভাবগম্ভীর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নি¤েœ বিভিন্ন সময়ের কয়েকটি দাওয়াতপত্র সন্নিবেশিত করা হলো।

আগামী ৫৫তম উরশ শরীফ ২০২১, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ১ ও ২ মার্চ ২০২১ মোতবেক ১৬, ১৭ ও ১৮ ফাল্গুন ১৪২৭ বাংলা রবি, সোম ও মঙ্গলবার ভাবুক প্রেমিকদের উপস্থিতিতে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।

দাওয়াতপত্র